দুই ব্যক্তি করোনার কারণে বাইরে যেতে পারছেন না। কাজ-কর্ম না থাকায় ঘরে খাবারও নেই বলে গত সোমবার সন্ধ্যায় সরকারি জরুরি সাহায্য সেবা ৩৩৩ নম্বরে ফোন দিয়ে সাহায্য চান। পরে সেখান থেকে ওই বার্তা জেলা প্রশাসককে জানানো হয়। জেলা প্রশাসক সঙ্গে সঙ্গে সংশ্লিষ্ট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে (ইউএনও) ওই দুই ব্যক্তির ঘরে প্রয়োজনীয় খাবার পৌঁছে দেয়ার নির্দেশ দেন। পরে রাত আটটায় ত্রাণ সামগ্রী নিয়ে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ওই থানার ওসিকে নিয়ে পাশাপাশি ওই দুই বাড়িতে যান। এ সময় সাহায্য প্রার্থীরা জানান, তাদের ত্রাণের বা খাবারের কোনো অভাব নেই। মজা করে ৩৩৩ নম্বরে ফোন করেছিলেন। এরপর ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে ওই দুই ব্যক্তিকে ২৮ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
ঘটনাটি গত সোমবার রাতে নেত্রকোনার পূর্বধলা উপজেলার বিশকাকুনি ইউনিয়নের ধোবারুহি গ্রামের। দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- ধোবারুহি গ্রামের বাসিন্দা মো. হারুন অর রশিদ (৫৫) ও মো. আবুল বাশার (৩৮)। তাদের মধ্যে হারুন অর রশিদ ঠিকাদারি কাজ করেন। অন্যজন ব্যবসায়ী।
জানা গেছে, ঘরে খাবারও নেই বলে গত সোমবার সন্ধ্যায় সরকারি জরুরি সাহায্য সেবা ৩৩৩ নম্বরে ফোন দিয়ে সাহায্য চান। পরে সেখান থেকে ওই বার্তা নেত্রকোনা জেলা প্রশাসক মঈনউল ইসলামকে জানানো হয়। জেলা প্রশাসক সঙ্গে সঙ্গে পূর্বধলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) উম্মে কুলসুমকে ওই দুই ব্যক্তির ঘরে প্রয়োজনীয় খাবার পৌঁছে দেয়ার নির্দেশ দেন। পরে রাত আটটায় ত্রাণ সামগ্রী নিয়ে পূর্বধলা উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) নাসরিন বেগম সেতু থানার ওসি মোহাম্মদ তাওহীদুর রহমানকে নিয়ে পাশাপাশি ওই দুই বাড়িতে যান। এরপর জানতে পারে সাহায্য প্রার্থীরা মজা করার জন্য কল করেছিলেন।
খামখেয়ালিপনার অপরাধে এ সময় সহকারী কমিশনার (ভূমি) ভ্রাম্যমাণ আদালত বসান। আদালতে ওই দুই ব্যক্তি দোষ স্বীকার করেন। পরে আদালতের ত্রাণ কাজে বিঘ্ন সৃষ্টি করায় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা আইনে হারুন অর রশিদকে ২৫ হাজার টাকা জরিমানা করেন। অনাদায়ে ১৫ দিনের জেল এবং আবুল বাশারকে ৩ হাজার টাকা অনাদায়ে তিন দিনের জেল ঘোষণা করেন। অবশ্য টাকা দিয়ে ওই দুই ব্যক্তি মুক্তি লাভ করেন।
পূর্বধলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) উম্মে কুলসুম জানান, সরকারি ত্রাণ নিম্নআয়ের ও খেটে খাওয়া মানুষের জন্য এবং যাদের কর্ম বন্ধ হয়ে গেছে। অথচ হারুন অর রশিদ পেশায় একজন ঠিকাদার। অপরজন ব্যবসায়ী। তাদের ঘরে যথেষ্ট খাবার মজুদ রয়েছে এবং ত্রাণের প্রয়োজন নেই। মজা করে বিঘ্ন সৃষ্টি করতে তারা এ কাজ করেছিলেন। পরে আদালত তাদের এ দণ্ড প্রদান করেন।
টাইমস/এইচইউ